ঢাকা, ২৪ ফেব্রুয়ারি: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি এবং খুনের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ চরম উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সংগঠন ও সাধারণ জনগণ আন্দোলনে নেমেছে।
গত এক মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত অপরাধের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গেছে। পুলিশের দেওয়া তথ্যানুসারে, শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই রাজধানীতে প্রায় ১৫০টির বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে, যার বেশিরভাগই সন্ধ্যা থেকে গভীর রাতের মধ্যে সংঘটিত হয়েছে।
জনগণের ক্ষোভ ও আন্দোলন
আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি তীব্রভাবে বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতির জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে একজন বক্তা বলেন, “আমাদের ঘর থেকে বের হতে ভয় লাগে। কোথাও নিরাপত্তা নেই। সরকার যদি জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, তবে তারা ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারায়।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক দলগুলোও সরব হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল এবং কয়েকটি নাগরিক সংগঠন আগামী সপ্তাহে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে এবং অপরাধ দমনে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, “আমরা ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি অপরাধী চক্রকে শনাক্ত করেছি এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, শুধুমাত্র অভিযান চালিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি।
জনগণের প্রত্যাশা
নাগরিকরা চায়, সরকার দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিক এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করুক। তারা আশা করছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জনগণের উদ্বেগের গুরুত্ব অনুধাবন করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
পরবর্তী সময়ে আন্দোলনের গতিপথ এবং সরকারের প্রতিক্রিয়া কেমন হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।